Sunday, November 19, 2017

দাবার চাল

দাবা চাল
ফুফুর বাড়ি থাকার শর্ত একটাই দাবা খেলা শিখতে হবে। শেখা হলে প্রতিদিন সবুজের সাথে দাবা খেলতে হবে। সবুজ যতক্ষণ চায় ততক্ষণ খেলতে হবে।

শর্ত খুব একটা কঠিন না, কয়েকমাস হল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ শুরু হয়েছে। এলাকার বড়ভাই যে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ বর্ষের ছাত্র, সে বলেছে হলে একটা সিট করে দিবে। তবে প্রথম কয়েক মাস গণরুমে থাকতে হবে। পরে বড়ভাই যখন চলে যাবে তখন তার রুমে তুলে দিতে পারবে।
গণরুম সম্পর্কে যাদের আইডিয়া নাই তাদের জন্য একটা বর্ণনা দেওয়া প্রয়োজন। হলে কিছু রুম থাকে যেখানে একসাথে ছয় থেকে বিশ জন শিক্ষার্থী থাকে। কোথাও এর বেশিও থাকতে পারে। তাহলে ভাববেন এত শিক্ষার্থী রাতে ঘুমায় কোথায়? তারও ব্যবস্থা আছে। এই রুমগুলোতে ঢালাও বিছানা করা হয়। রাতে কারও পা কারও মাথার কাছে, কার মাথা কোন দিকে পা কার উপর তার খবর কে রাখে?

তবে প্রতিদিনই সবাই যে রুমে থাকে তাও না। কেউ না কেউ রাতে এদিক সেদিক গিয়ে ঘুমায়। কেউ হল লাইব্রেরিতে, কেউ মসজিদে কেউ টিভি রুমে সময় কাটায়, পড়াশোনা করে। এটাই ভরসা। গণরুমে একটা ব্যাগ একটা বেডিং রাখা মানে হলো হলে একটু জায়গা পাওয়া। এটা না করলে সরাসরি কোন রুমে উঠতে বেগ পেতে হয়।

গণরুমে কয়েকটা দড়ি টানানো থাকে শার্ট প্যান্ট ইত্যাদি ব্যবহার্য কাপড় রাখার জন্য। কেউ কেউ কাপড় ব্যাগেও রেখে থাকে। আপনি হয়ত ভেবেছিলেন সাদা শার্টটি পড়ে আজ স্মার্ট সেজে ক্লাশে যাবেন, সকালে উঠে রেডি হতে গিয়ে দেখলেন শার্টটি নেই। কি আর করা, শার্টের জন্য তো আর ক্লাশ মিস দেওয়া যায় না। ক্লাশ শেষে এসে দেখবেন শার্টটি আগের জায়গাতেই আছে। সারাদিন তাহলে শার্টটি কোথায় ছিল, না ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এখানে কোন কিছু হারায় না। আপনি হয়ত গিয়েছেন কলা ভবনে ক্লাশ করতে, কিন্তু আপনার শার্ট দেখবেন আইন অনুষদে কারও শরীরে ভর করে ক্লাশ করে এসেছে।

আবার এখানে থাকায় অনেক কষ্ট এমন ভাবার কিছু নেই। আনন্দও আছে। দেশের নানান প্রান্ত থেকে নানান ধরনের শিক্ষার্থী এসে জড় হয়। একেকজন একেক ধরনের সংস্কৃতির ধারক বাহক। গণরুমগুলোতে তাই এই পৃথক পৃথক সংস্কৃতির বিনিময় হয়।

এর প্রমাণ পাওয়া যায় রাত বিরেতে। বিভিন্ন রুম থেকে ভেসে আসে অঘোষিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের। এখানে কেউ শিল্পী, কেউ ঘোষক, কেউ বিচারক। দেশ বিদেশ, সংস্কৃতি, সমাজ, সংসার, রাজনীতি নিয়ে চলে বিরতিহীন আড্ডা। আড্ডায় বসলে বোঝা যায় জ্ঞানের পরিধিতে কার অবস্থান কোথায়।

এসব ছেড়ে ফুফুর বাসায় উঠতে ইচ্ছে হয় না। গণরুমে কয়েকদিন কাটিয়েছি। আমার ডিপার্টমেন্টে পড়ার খুব চাপ। প্রথম থেকে পড়াশোনায় সময় দিতে না পারলে পরবর্তীতে এই চাপ সামলানো কঠিন। তাই গণরুমে একটা সিট দখল করলেও হলে থাকতে আপাতত ইচ্ছে নেই। ফুফুকে তার বাসায় থাকব বলায় তেমন আপত্তি করল না। তবে শর্ত ঐ একটাই, সবুজের সাথে দাবা খেলতে হবে।

সবুজ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ফুফুর ইচ্ছা সবুজকে সর্ব বিষয়ে পারদর্শী করে গড়ে তুলবেন। তাকে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাংকন ইত্যাদি সব জায়গায়ই ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। যাতে কোনটাতে বাদ না যায়। তবে খেলাধুলার ব্যাপারে একটু রক্ষণশীল। কেবল মাত্র যে খেলায় মাথা ব্যবহার করা যায় তাই শিখিয়েছেন। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ইত্যাদি খেলতে দিতে তেমন আগ্রহী না। যদি এসব খেলতে গিয়ে কোন ক্ষতি হয় তাহলে?তারচেয়ে দাবা খেলাই ভাল। শারীরিক আঘাতের কোন সম্ভাবনাই নেই। ঘরে বসে খেলা যায়।

আজ দুইদিন হল ফুফুর বাসায় উঠেছি। গেস্টরুমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুফু বিশাল বড়লোক, তার বাসা যেমন বড়, গেস্ট রুমটাও তেমন বড়। সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। এই ঘরে নিজেকে বড্ড বেমানান মনে হচ্ছে। অনভ্যাসের চন্দনের মতো, একদিন কপালে উঠায় চড়চড় করছে। ক্লাশ শেষ করে বাসায় এসেছি বিকেল বেলায়, ভেবেছিলাম বিকেলে একটু জিরিয়ে নোট নিয়ে বসবো। তা আর হল কোথায়? সবুজ দাবা নিয়ে হাজির।

কোনটা বোড়ে, কোনটা হাতি, কোনটা ঘোড়া, কোনটা রাজা, কোনটা গজ, হাতির চাল কেমন হবে, ঘোড়ার আড়াই চাল কি করে দিতে হয় এই সব সারা বিকেল ধরে শিখিয়ে গেল।

সবুজের কষ্ট দেখে নিজেরই খারাপ লাগছে। আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমাকে দাবা খেলা শেখাতে। ফুফু কিংবা সবুজ একবারও জানতে চায়নি আমি দাবা খেলতে পারি কিনা? এই একটি প্রশ্ন করলেই এত কষ্ট করতে হত না বেচারাকে। আসল কথাটা হল, আমি দাবা খেলা বেশ কয়েক বছর আগেই শিখেছি। আমার বাড়িটা গ্রামে থাকলেও শহরের একটু আমেজ ছিল। মফস্বল শহর বলা চলে বা তারও কিছু কম। ইউনিয়ন পর্যায়ে বেশ কিছু সরকারি বাসভবন থাকে তার কোন একটায় বাবার চাকুরীর সূত্রে থাকা হত। আমাদের মতো আরেক ফ্ল্যাটের আংকেলের কাছে দাবা খেলা শিখেছিলাম। আজ এতদিন পর এটা কাজে লেগে যাবে কে জানতো?

দাবা খেলা শেখার প্রথমদিন কোনটার চাল কিভাবে দিতে হয়, কত ঘর যায় কিভাবে চেকমেট করতে হয় এসব শেখানো হল। আমিও বাধ্য ছেলের মতো শিখতে লাগলাম। আমার মতো মনোযোগী শিক্ষার্থী পেয়ে ওরও আগ্রহ দ্বিগুন হয়ে গেল। ভাবছি মাঝে মাঝে অভিনয় মন্দ না।

দ্বিতীয় দিন সবুজ খেলা শিখিয়ে বসে গেল খেলতে। টানা দশ গেম খেলে খান্ত দিলো। প্রতিবারই ঐ জিতে গেল। কিংবা বলা চলে জিতিয়ে দিতে হলো। কয়েকবার মনে হয়েছিল হারিয়ে দেই। কত সহজ সহজ চালও ভুল করতে হল। খেয়াল করে দেখলাম দাবা খেলায় জেতার চেয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হেরে যাওয়া অনেক বেশি কঠিন। ভুল করেও দেখি জটিল করে ফেলা যায়। সবুজের খুশি দেখে কে? এতবড় একজনকে এতবার হারিয়ে দেওয়াও এক ধরনের তৃপ্তির। আমি জিততে দিলাম পাছে ভয় হল, যদি হেরে গিয়ে আমাকে বাসায় আশ্রয় না দেয় তখন আবার সেই গণরুমে গিয়ে উঠতে হবে।

ভার্সিটি, দাবা খেলা, ফুফুর বাসা, ভার্সিটি এভাবেই আমার জীবনটা চক্রের মতো ঘুরতে লাগল। এভাবে কত দিন। ভার্সিটির বড় ভাইয়ের পরীক্ষা আর কয়দিন বাদেই শেষ হবে। তখন হলে উঠে যাব। এই কয়দিনে আর কিছু না হোক কি করে দাবা খেলায় হারতে হয় তা শিখেছি। এখন খুব সহজেই কয়েক চালে হারতে পারি। সবুজও বেজায় খুশি, আগের চেয়ে অনেক সহজে হারাতে পারে আমায়। এতদিনে বুঝলাম জিতে যেমন আনন্দ পাওয়া যায় হেরেও তেমন আনন্দ পাওয়া যায়। এই আনন্দ আরেকজনকে খুশি করার আনন্দ। এত সহজে মানুষকে আনন্দ দেওয়া যায়, সুখী করা যায় তা আগে জানা ছিল না। বুঝলাম, কখনও কখনও হেরেও জেতা যায়।

ফুফু-ফুপা ছেলের সাফল্যে বেশ আনন্দিত। ফুপার বিশাল বড় কোম্পানী। প্রতিবছর কোন না কোন সামাজিক কর্মকাণ্ডের আয়োজন করে বিশাল অংকের টাকা খরচ করে। আসলে কিছু কালো টাকা সাদা করার আয়োজন। ছেলের সাফল্যে এবার তার কোম্পানী দাবা খেলার আয়োজন করল। পুরস্কারের অঙ্কটাও বেশ জোরালো। হিসেব করে দেখলাম, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স মাস্টার্স শেষ করতে যে টাকা খরচ হবে তার চেয়ে দ্বিগুণ পরিমান অর্থ তারা পুরস্কার ঘোষনা দিয়েছে।

সবুজ এতদিন দাবা খেলে একবারও আমার কাছে হারেনি। আসলে হারতে দেইনি। হারের ভাগটা নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছি। পাছে আবার মনঃক্ষুণ্ন হয়। তাহলে হয়ত এত সুখের একটা আশ্রয় হারাতে হবে। কি দরকার আছে বড়লোকদের উসকে দেওয়ার। তার চেয়ে তারা যেমন আছে তেমনই থাক।

যদিও বড় করে খেলার আয়োজন করা হয়েছে তবে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা খুব বেশি না। আয়োজনের যথেষ্ট প্রচারও হয়েছে। তবে নানান জটিলতায় অনেকে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। ঘরের খবর যেটুকু জানি, যাতে বেশি কেউ অংশ নিতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে এত সব জটিলতা। খেলায় আমিও নাম দিয়েছি। ফুপু জানতে পারেনি।আসলে আমিও বলিনি, সেও জিজ্ঞেস করেনি।

দেখতে দেখতে ম্যাচের সময় ঘনিয়ে এল। ২৬ মার্চ খেলার দিন ঠিক করা হয়েছে। সকাল সকাল চলে গেলাম অনুষ্ঠান স্থলে। বাসার সবাই এসেছে, এই বাসার ছেলে খেলবে বলে কথা। ব্যাপারই আলাদা। যথারীতি অংশগ্রহণকারীদের নাম ঘোষনা শুরু হল, আমার নাম আসতে যখন নির্ধারিত টেবিলের দিকে যাচ্ছি ফুপু কিছুটা অবাক হলো। তবে কিছু বলল না। হয়ত ভাবলো, ভালই হলো, যেহেতু আমি সব সময় হারি, তাই আমার সাথে খেলা হলে ছেলে তার জিতবে।

মোট আটটা দল করা হল, প্রতি দলে চারজন করে খেলোয়াড়। দল থেকে যে জিতবে তাদের নিয়ে মূল খেলা হবে। আমার দল থেকে আমি জিতে মূল খেলায় অংশ নিলাম। ফুপু তার ছেলেকে নিয়ে এত ব্যস্ত ছিল যে আমার খেলা দেখা বা আমার খোঁজ নেওয়ার দরকারও মনে করেননি। আমি তার কাছে যে মাপের খেলোয়াড় তাতে এতক্ষণে হেরে যাওয়ার কথাই। আর হেরে যাওয়া মানুষকে কে মনে রাখে।

মূল দলের খেলা শেষে চারটি দল করা হল। দুইজন দুইজন করে চারটি দলে খেলা শুরু হল। সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য যাই হোক না কেন, সবুজের সাথে আমার এ পর্বেও দেখা হল না। এইবারও আমি জিতে গেলাম। এবার মাঠে আমরা চারজন। এবার ভাগ করা হল দুইজন দুইজন করে দুইটি দলে। সবুজের দলে এবারও আমার ঠাঁই হলো না।

এবার লড়াইটা হল হাড্ডাহাড্ডি। প্রতিপক্ষকে হারাতে একটু বেগই পেতে হল। তবে জিতেও কেন যেন আনন্দ পেলাম না। ছেলেটার জন্য খারাপই লাগল। ওর সাথে ফাইনালে দেখা হলে ভালোই লাগত, হল না। ঐ দলে ফুফাত ভাই জিতেছে। তাই কষ্টটা একটু বেশিই লাগছে। জানি তো খেলার ফল কি হতে যাচ্ছে।

ফাইনালে রয়ে গেলাম আমি আর আমার ফুফাত ভাই সবুজ। ফাইনাল পর্বের আগে দুই দলের হেরে যাওয়াদের নিয়ে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী পর্ব শুরু হল। একটু বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হল। ফুফু এবার নজর দিলো আমার দিকে। ছেলের আমার সাথে খেলা পড়ায় মনে হল অনেক খুশি হয়েছে। জানেই তো ফল কি হবে।

অবশেষে খেলা শুরু হল। চাল দিতে গিয়ে কেমন যেন শরীরে কাঁপুনি সৃষ্টি হল। এত বড় আয়োজনে কখনও খেলা হয়নি। এত টাকা পুরস্কার, যদি জিতে যাই তাহলে পড়ার চিন্তা থাকবে না। আবার ফুফুর কথাও মনে এলো। এতদিন আশ্রয় দিয়েছেন। এখন তার সাথে বেইমানি করি কি করে।

খেলা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। চালে এমন কিছু ভুল হয়ে যাচ্ছে যা সবুজের জন্য সমস্যাই হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন যে আমার খেলা দেখে সেই খেলার সাথে আজকের খেলা মিলাতে পারছে না। আমিও বুঝলাম ইচ্ছে করে হেরে যাওয়া কত কঠিন। এতদিন এত কঠিন লাগেনি।

অবশেষে খেলা শেষ হল। হারতে হারতে কিভাবে যেন জিতেও গেলাম। সবুজ এমন একটা ভুল করে বসেছিল যে, আমার জেতা ছাড়া উপায় ছিল না। ফুপুও দেখি কিছু বলতে পারছে না। বলার কিছুই ছিল না। তাই ফলাফলও খুশি মনে মেনে নিল।

ফুপুর বাসায় আর থাকা হয়নি, হলের বড় ভাইয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ায় হলে চলে এসেছি। এখন আর পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে না, তবে আড্ডাটাকে মিস করি। মাঝে মাঝে গণরুমের বন্ধুদের নিয়ে ছাদে আড্ডা দেই।

এর মাঝে একদিন সবুজের ফোন পাই। পড়ার চাপে ফুপুর বাসায় যাওয়া হয়নি অনেকদিন। সবুজের খোঁজও রাখা হয়নি। ওর ফোন পেয়ে কিছুটা আশ্চর্য যে হইনি তা না। কুশলাদি জানার পর ও কিছু কথা বলল, যার মর্মার্থ হলো এই-আমি ভালো দাবা খেলতে পারি তা ও আগেই বুঝেছিল। কিন্তু কিছু বলেনি। ওর মায়ের ইচ্ছে সব বিষয়ে পারদর্শী হবে। কিন্তু ওর তা পছন্দ না। ওর পছন্দ ঘুরে বেড়াতে। মা কোথাও যেতে দেয় না। মাকে খুশি করতে ও দাবা খেলেছে আমার সাথে। আর আমি ফুপুকে খুশি করতে ওর সাথে জিতেছি এটা ও বুঝত। তারপরও ভান করত যাতে না বুঝি।

প্রতিযোগিতার দিন ও সহজেই হেরে যেতে পারত, তাহলে আমাকে কথা শুনতে হত ফুপুর কাছে। ও চেয়েছিল আমি যাতে জিতি, আর টাকাটাও পাই। ও আমার অনেক কথাই জানতো। তবে যাতে ফুপু যেন কিছু বলতে না পারে তাই এভাবে হেরে গেল।

আমি ভাবলাম, তাহলে এই যে জিতলাম এর অর্থ কি রইল। ও তো হেরেও জিতে গেল।

রংপুর, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬
আপনার মন্তব্য লিখুন

ফেসবুক লাইক ও শেয়ার